আদা অনেক ভেজষগুন সমৃদ্ধ উদ্ভিদ কিন্তু বাঙ্গালীরা মূলত আদা মশলা হিসাবে ব্যবহার করে। আদা অনেক ভেজষ পদার্থ আছে যা অনেক রোগ থাকে মুক্তি দিতে পারে। অনেকে আদা দিয়ে চা খেয়ে থাকে যা শরীরের জন্য খুব উপকারী। এছাড়া সব্জি, মাংসের তরকারি ও অনেক সালাদে আদা ব্যবহার করা হয়।
আদাতে আছে শত শত ভেজষগুন যুক্ত যৌগ, যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এখানে আদার কিছু উপকারীতা দেয়া হল।
আদার যত পুষ্টিগুন
- আদার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট শরীরের রোগজীবাণুকে ধ্বংস করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- জ্বর জ্বর ভাব, গলাব্যথা ও মাথাব্যথা দূর করে।
- শুক্ষকাশি এবং হাঁপানির সমস্যায় আদার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে উপশম হয়।
- বমি বমি ভাব দূর করার জন্য খানিকটা আদা চিবিয়ে বা আদার রসের সঙ্গে একটু নুন মিশিয়ে খেলে উপকার হয়।
- প্রতিদিন নিয়ম করে আদা খেলে কিডনি জনিত সমস্যা ও জটিলতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- ঠাণ্ডায় টনসিলাইটিস, মাথাব্যথা, টাইফয়েড,নাক দিয়ে জল পড়া, নাক বন্ধ হওয়ার, মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রে আদা খেলে উপকার হয়।
- আমাশয়, জন্ডিস, পেট ফাঁপার সমস্যায় আদা চিবিয়ে বা রস করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
- এইচআইভি / এইডস চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত ওষুধগুলির কারণে রোগীদের বমি বমি ভাব হয়। গবেষকরা পরামর্শ দেন যে প্রতিদিন আদা গ্রহণ করলে এইচআইভি চিকিত্সা প্রাপ্ত রোগীদের বমি বমি ভাব বা বমি হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস পায়।
- গবেষণায় দেখা যায় যে, ঋতুস্রাবের প্রথম ৩-৪ দিনের মধ্যে আদা গুঁড়ো ৫০০-২০০০ মিলিগ্রাম গ্রহণ করলে নারীদের ও শিশুদের ঋতুস্রাবের সময় ব্যথা কমিয়ে দেয়। কিছু গবেষণা দেখায় যে, আদা ব্যথার ওষুধের (যেমন আইবুপ্রোফেন, মেফেনামিক এসিড বা নোভাফেন) মতো কাজ করে।
- কাঁচা আদা খেলে অস্টিওআর্থারাইটিসে আক্রান্ত রুগীর ব্যথা কিছুটা কমে যায়। প্রমাণ রয়েছে যে কাঁচা আদা চিবিয়ে খেলে কোমর এবং হাঁটু অস্টিওআর্থারাইটিস ব্যাথার ওষুধের (যেমন আইবুপ্রোফেন এবং ডাইক্লোফেনাক) কাজ করে। তবে বিরোধী ফলাফল রয়েছে।
- কাঁচা আদা খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত লোকের রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যায়। এই জন্য প্রতিদিন ৩ গ্রাম আদা কমপক্ষে ৩ মাস ধরে খেতে হবে।
- গবেষণা থেকে জানা যায় যে কাঁচা আদা খাবার খাওয়ার আগে খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং বদহজম থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে খানিকটা আদা চিবিয়ে খেলে অরুচি কেটে যায় এবং খাবারে রুচি ফিরে আসে |
- আদায় রয়েছে কার্যকরী ফ্যাটি অ্যাসিড ও লিনোলেইক অ্যাসিড যা চুলকে শক্তপোক্ত করে এবং পুষ্টির ঘাটতি দূর করে চুলকে উজ্জ্বল করে।
- আদার মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও বায়োঅ্যাকটিভ উপাদান যা মস্তিষ্কের অকালবার্ধক্য কমাতে সাহায্য করে। এতে স্মৃতিশক্তি বাড়ে।
- আদায় ক্যানসার প্রতিরোধক উপাদান থাকে। এটি কোলন ক্যানসারের কোষ ধ্বংস করতে সাহায্য করে। জরায়ুর ক্যানসার প্রতিরোধ করে।
- অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে বিস্ময়করভাবে আদা সাহায্য করে। আদা ও লেবু মিশ্রিত জল প্রতিদিন ৩-৪ গ্লাস পান করলে শরীরের অতিরিক্ত ক্যালরি বার্ন হয়।
- আদা খুশকির সমস্যা দূর করে। স্ক্যাল্প শুষ্ক হলে খুশকির সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক, আদা স্ক্যাল্প থেকে মরা কোষ দূর করে চুলের ভেতর পর্যন্ত পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করে।
- আর্টারি ওয়ালে ব্যাড কোলেস্টেরল ও ফ্যাটি অ্যাসিড জমে করোনারি হার্ট ডিজিজের সমস্যা দেখা যায়। ফলে রক্ত চলাচলে অসুবিধে দেখা যায়। প্রতিদিন নিয়ম করে আদা খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।আর্টারি ওয়ালে ব্যাড কোলেস্টেরল ও ফ্যাটি অ্যাসিড জমে করোনারি হার্ট ডিজিজের সমস্যা দেখা যায়। ফলে রক্ত চলাচলে অসুবিধে দেখা যায়। প্রতিদিন নিয়ম করে আদা খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- লিভার ও ব্লাডে কোলেস্টেরল অ্যাবজর্বশন কম রাখতে আদা সাহায্য করে।
- মুখে আদা গ্রহণ করলে গর্ভবতী মহিলাদের বমি বমি ভাব হ্রাস পায়। তবে এটি ধীরে কাজ করতে পারে। গর্ভাবস্থায় যে কোন ঔষধ গ্রহণ করা একটি বড় সিদ্ধান্ত তাই আদা নেওয়ার আগে আপনার স্বাস্থ্যসেবা দানকারীর সাথে সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা করতে ভুলবেন না।
- কোভিড-১৯ ভাইরাসের আক্রমণের ফলে জ্বর,কাশি,সর্দি হয়। আদা এইসব উপসর্গ থেকে মুক্তি দিতে পারে।
আমরা যদি নিয়মিত আদা খাওয়ার অভ্যাস করি তাহলে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এতে সহজেই নিজের অজান্তে অনেক রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারি। তাই প্রতিদিন আদা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন, নিজেকে সুস্থ রাখুন।